প্রাচীরের ছিদ্রে এক নাম গোত্রহীন ফুটিয়াছে ছোট ফুল অতিশয় দীন । “ধিক ধিক” বলে তারে কাননে সবাই , সূর্য উঠি বলে তারে, “ভাল আছ ভাই”?

বাগানে অসংখ্য ফুলের সঙ্গে এক নাম-গোত্রহীন অতিশয় ছোট ফুল ফুটেছে। তার এই দীনতা লক্ষ্য করে সকল ফুলই তাকে ধিক্কার দেয়। কারণ অন্য ফুলের মত তার চাকচিক্য ও কৌলিন্য নেই ,সে অতি সাধারন। তাই সকলে তাকে ধিক্কার দেয়। কিন্তু কিছুক্ষণ বাদে যখন সূর্য ওঠে ।তখন তার কিরণ অন্য ফুলের মত সেই ছোট ফুলটিকেও স্পর্শ করে এবং সূর্য ভেদাভেদ ভুলে ছোট ফুলটিকে আত্মীয় সুলভ সম্মোধন করে তার কুশল সংবাদ জিজ্ঞাসা করে।

আমাদের এই পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছে যারা নিজেদের প্রতিপত্তি, অর্থ ও নিজেদের ঠুনকো মর্যাদা বোধ কে আটকে ধরে। এইসব মানুষগন তাদের অর্থ ও প্রতিপত্তির দ্বারা কম সক্রিয় মানুষগণের সঙ্গে সদা সর্বদা একটা দূরত্ব বজায় করে চলে। তারা তাদের অতিশয় হীন মনে করে তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখে । তারা এই দূরত্ব বজায় রাখে তাদের মর্যাদাও মান সম্মান ক্ষুণ্ন হওয়ার ভয়ে। ফলে এই সব মানুষগণ ক্রমশ সংকীর্ণমনা হয়ে পড়ে। তারা ক্রমশ স্বার্থপর হয়ে নিজেদের ঠুনকো মর্যাদাবোধ নিয়ে বাঁচে যা মানুষকে মানুষের থেকে ক্রমশঃ আলাদা করে দেয়।

কিন্তু এদের পাশাপাশি একদল এমনও আছে যারা মহৎ মনের ।তারা এই ঠুনকো মান মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার পক্ষপাতী নয়। তাদের কাছে তাদের সমান প্রতিপত্তি যুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই । তারা সকলকে সমান নজরে দেখে । এইসব মানুষগণ উদারচেতা ,তারা স্বার্থপর নিজেদের ঠুনকো মর্যাদার বশবর্তী নয় ।তারা ব্যক্তিত্ব অস্তিত্ব মর্যাদা, অর্থ ,প্রতিপত্তি দিয়ে করে না ।ফলে এদের করুণা প্রীতি ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকলের উপর সমানভাবে বর্ষিত হয় ।তাই এরা সমদর্শী। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের পৃথিবীতে এই ধরনের মানুষের সংখ্যা খুবই কম।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts
Scroll to Top