হায় রে ভজনালয় ,তোমার মিনারে চড়িয়া ভন্ড গাহে স্বার্থের জয়।

ভজনালয় মানুষের ঈশ্বর উপাসনার জন্য রক্ষিত পবিত্র স্থান। মানুষ দেবতার পূজার স্থান হিসাবে দেবালয়কে বেছে নিয়েছে। এই দেবতার পূজায় সাহায্য করার জন্য মানুষ বিভিন্ন মানুষের সাহায্য নেয়। তারা সাধারণত পুরোহিত শ্রেণীভুক্ত ।কিন্তু কালের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই সকল পুরোহিতগন ক্রমশ স্বার্থপর হয়ে উঠছে। ধর্মের নামে তাদের গ্রাস করেছে ভন্ডামি। তাই তারা ভজনালয়ের মিনারে বসে নিজের স্বার্থের জয়গান গায় ঈশ্বর ভজনাকে দূরে সরিয়ে।

সৃষ্টির আদিকাল থেকে প্রকৃতির বিভিন্ন জিনিস কে মানুষ ভয় পেয়ে এসেছে। জানা-অজানা কালক্রমে এই ভয়ই জন্ম দিয়েছে জানা-অজানা জিনিসের উপর বিশ্বাস করে তাকে পুজো করার মত মন। কালক্রমে এই ভক্তি ঈশ্বরের প্রতি রূপান্তরিত হয়েছে ।আশাবাদী মানুষ তার জীবন পথের চড়াই উতরাই কে পার হওয়ার জন্য ঈশ্বরের সাহায্য চেয়ে তার প্রতি সশ্রদ্ধ বিশ্বাস রাখে ।এবং পূজা-অর্চনায় মনোনিবেশ করে।এই পূজা-অর্চনায় তাকে সাহায্য করার জন্য যারা এগিয়ে আসেন তারা হলেন পুরোহিত ও ব্রাহ্মণ শ্রেণীর মানুষেরা ।যারা ভক্তের প্রার্থনা ঈশ্বরের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মাধ্যম হিসেবে কাজ করেন।

কালের চক্রের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এইসব পুরোহিত ও যাজকগোষ্ঠীর ও পরিবর্তন ঘটেছে ।ঈশ্বর লাভের আশা ও ভক্তি উচ্চমার্গ ছেড়ে তারা স্বার্থের কঠিন চড়ায় এসে দাঁড়িয়েছে ।তাই ঈশ্বর ও ভক্তির মুখোশ পরে তারা তাদের ব্যাক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যই সদা ব্যস্ত থাকে। ফলে তারা ধর্মের নামে অপধর্ম প্রচার করে। যা মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে ,মানুষকে মিথ্যা আচার-আচরণ ও কুসঙস্কারাচ্ছন্ন করে তোলে ।এর ফলের লক্ষ্যের থেকে উপলক্ষ‍্য ও আয়োজন বেশি হয়ে যায়। ফলে প্রকৃত ঈশ্বর সাধনা হয় না। এইসব পুরোহিতগন মিথ্যে আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নিজের অর্থলিপ্সাকে চরিতার্থ করে নিজের লোভানলে অবিরাম অর্থাহুতি দিতে থাকে। তাই ভোজনালয় এ ঈশ্বর ভজনার স্থানের বদলে পুরোহিতদের অর্থলিপ্সা স্বার্থের গান গাইবার স্থান হয়ে ওঠে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts
Scroll to Top